পৃষ্ঠাসমূহ

জুলাই ২৮, ২০১১

বাংলা গানের এক অধ্যায়ঃসন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

গৌরি প্রসন্ন মজুমদার লিখেছিলেন—‘হয়তো কিছুই নাহি পাবো, তবুও তোমায় আমি দূর হতে ভালোবেসে যাবো।’ আর এই গানে কণ্ঠ দিয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় তো কিংবদন্তি হয়ে রইলেন। তিনি এ পর্যন্ত ১০ হাজার গান গেয়েছেন, সব গানই তো তাকে খ্যাতি দিয়েছে। সেই কবে ১৯৫৪ সালে অনুপম ঘটকের সুরে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছবিতে সন্ধ্যা গেয়েছিলেন—‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু’। এ গান শুনলে বৃদ্ধরাও যৌবনে চলে যেতে যান। তার নামটিই যেন হৃদয়ে ঝঙ্কার তোলে। নামটির এমন মহিমা যে উচ্চারিত হলেই শ্রোতাদের মনের আকাশে এক লহমায় গানের ইন্দ্রধনু ফুটে ওঠে। যে কোনো লগ্নই হয়ে ওঠে গান শোনার। তার নাম শুনতেই কানের ভেতর নাকি মনে কিংবা মাথার ভেতর ভাঙতে থাকে গানের ঢেউ—‘মায়াবতী মেখে আনে তন্দ্রা’, ‘উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা’, ‘মধুমালতী ডাকে আয়’, ‘বকম বকম পায়রা’, ‘এ গানে প্রজাপতি’, ‘নতুন সূর্য আলো দাও’, ‘ওগো মোর গীতিময়’, ‘চন্দন পালংকে শুয়ে’, ‘মধুর মধুর বংশী’, ‘কুহু কুহু কোয়েল’, ‘নেবো না সোনার চাঁপা’, ‘সজনী ও সজনী’, ‘আমি প্রিয়া তুমি প্রিয়’, ‘ও ঝরা পাতা এমনি তুমি’, ‘হাতে কোন কাজ নেই’, ‘যেখানে স্বপ্ন সুরে রইবে ভরে’, ‘না হয় রহিতে কাছে’, ‘বাঁশি বুঝি আর নাম জানে না’, ‘বধূয়া এলো না’, ‘চিনেছি তোমারে অচেনার মাঝে’, ‘তোমারে হারানো তো নয়’, ‘চৈতী ফুলের কী বাঁধিস রাঙা রাখী’, ‘পিয়া পিয়া পিয়া যে ডাকে আমায়’—এমনি অসংখ্য গান সঙ্গীত শ্রোতাদের মনে ছড়িয়ে দেয় স্মৃতিমেদুরতার কুয়াশা। বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে আছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বয়স এখন প্রায় বিরাশি বছর। এ বয়সে তার দুঃখ আছে। থাকবেই না কেন, তার গাওয়া হিট গান এ প্রজন্মের শিল্পীরা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গেয়ে বেশ নামধাম কামাচ্ছেন। এ ব্যাপারে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মনে করেন, কিছু টিভি চ্যানেল ও গান ব্যবসায়ী এ জন্য মুনাফা লুটছে। একদিন যে শিল্পীর নিতান্ত দুরবস্থায় কেটেছে শেষ জীবন, তার গান গেয়েই আজকের শিল্পীদের কত নামডাক। ভীষণ রকমের অবিচার এসব। নতুন শ্রোতারা আসল শিল্পীর কৃতিত্ব জানতেই পারছে না। আমার গাওয়া কত না গান এ প্রজন্মের শিল্পীরা টিভি চ্যানেলে করেন অথচ আমার নামটি তারা একটি বারের জন্যও স্মরণ করেন না। কতই না অকৃতজ্ঞ এ প্রজন্মের শিল্পী ও টিভি চ্যানেলগুলোর প্রযোজকরা।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এ বয়সে আরও মনে করেন, আগের দিনে শিল্পবোধ, নীতি বিসর্জন দিয়ে গান-বাজনা নিয়ে পুরোপুরি ব্যবসা ছিল না। আজকাল শুনি, কেউ সিডিতে গান শুনে গান গেয়ে দেয়। ভাবতে অবাক লাগে, এটা কী সম্ভব। একজন শিল্পী তার জীবনভর শিক্ষায়-সাধনায়-নিষ্ঠায় একটা স্টাইল তৈরি করেন। যেমন—হেমন্ত বাবুর স্টাইল, মান্না বাবুর স্টাইল, মানবেন্দ্র বাবুর স্টাইল অনেক মূল্য দিয়ে তাদের অর্জন করা।
১৯৪৪ সালে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সঙ্গীত জগতে আসেন। তার প্রথম রেকর্ডকৃত গান—‘তুমি ফিরায়ে দিয়াছ’ এবং ‘তোমার আকাশে ঝিলিমিলি করে’। মাত্র ১২ বছর বয়সে অর্থাত্ ১৯৪২ সালে তিনি রেডিওতে গান গাওয়া শুরু করেন। গানটি ছিল ‘যদি বা ফুরালো গান’।
সিনেমায় প্রথম গান করেন ১৯৪৮ সালে ‘অঞ্জন গড়’ ছবিতে। সেই রাই চাঁদ বড়ালের যুগ থেকে এ যুগের সুমনের সুরে গানও করেছেন তিনি।
অতীতের সঙ্গে আজকের তুলনাও করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তার অভিমত, সেসব দিনে শিল্পীরা নিজেদের উজাড় করে দিতেন, আজও রয়ে গেছে সেসব গান। আজকের সবই তো রেডিমেড—গানের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগই পাচ্ছে না শিল্পীরা। দুদিনেই লোকে ভুলে যাচ্ছে এসব গান। এসব দেখলে বড় কষ্ট হয়। অনুপম ঘটক, রবীন চট্টোপাধ্যায়ের মতো মিউজিক ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করা মানে প্রতিদিনই খানিকটা শেখা। আজকের শিল্পীরা সে সুযোগই পান না। এ নিয়ে আজকের শিল্পীরা আমার কাছেই আফসোস করেন।
এক সময় মুম্বাইয়ের শিল্পীদের সঙ্গেও তিনি কাজ করেছিলেন। এ বয়সে সেসব স্মৃতি এখনও সন্ধ্যার মনে নাড়া দেয়। মুম্বাইতে শচীন দেব বর্মণই তাকে ডেকে নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি অনিল বিশ্বাসের সুরে লতার সঙ্গে গান করেছিলেন। সেই সূত্রে লতার সঙ্গে তার খুব ভাব হয়। গীতা দত্তের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হয়েছিল।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে বলা হয় বাংলা গানের একটা পুরো অধ্যায়। বাংলা সিনেমার প্রথম ‘প্রিমা ডোনা’ কানন দেবীর হাত থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন এই সন্ধ্যা। পরবর্তী চার দশকে (১৯৪৮ থেকে ১৯৮৮) সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা ছবির প্লেব্যাক সম্রাজ্ঞীর আসনে। পাশাপাশি আধুনিক বাংলা গানের ক্ষেতে ৬০ বছর ধরে সোনালি ফসল তুলে এক বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন তিনি। তিনি যা অর্জন করেছেন তা মহীরুহের মতোই। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মানেই হেমন্ত-সন্ধ্যা, অনুপম-সন্ধ্যা, রবীন-সন্ধ্যা, মানবেন্দ্র-সন্ধ্যা, মান্না-সন্ধ্যা, শ্যামল গুপ্ত-সন্ধ্যা, সুচিত্রা সন্ধ্যা—এমন বহু উজ্জ্বল অধ্যায় ভরে রেখেছে তার শিল্প জীবনে। এভাবেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় লিজেন্ড হয়ে আছেন, যা সঙ্গীত প্রেমিকদের যে অহঙ্কারী হওয়ার রসদ জোগায়।


মহানায়ক উত্তম কুমার

প্রথমে অরুণ কুমার তারপর নাম পালটে উত্তম কুমার। শুরুর সেই লড়াইটা ছিল ভয়ঙ্কর। ফ্লপ এবং ফ্লপ। হাত থেকে কনট্রাক্টের কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছেন প্রযোজক। মুখের ওপর বলে দিয়েছেন, ‘কিছু মনে করবেন না, আপনার চেহারাটা নায়কোচিত নয়’। তুলনাটা চলে আসত প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গে। দ্বিতীয় প্রতিপক্ষও তখন নেপথ্যে দাঁড়িয়ে সেই ‘দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।’ তাঁর ‘মাচো-হিম্যান’ ইমেজে গত শতাব্দীর পঞ্চাশোর্ধ বাঙালিরা তখনও আত্মহারা। হৃদয়ের কুঠুরিতে লেখা হয়ে গেছে ‘দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়’ কিংবা ‘প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়া’ এই দুই নাম। তাদের পাশে নবাগত উত্তম কুমার। ভাগ্যিস বসু পরিবার (১৯৫২) বক্স অফিসের মুখ দেখেছিল। না হলে আজকের বাঙালি কোথায় পেত এই উত্তম কুমারকে। উডু উডু অ্যালবাট, বঙ্কিম গ্রিবা, হৃদয়ে তোলপাড় করা হাসি আর অভিনয়ের চূড়ান্ত আধুনিকতা এগুলোই উত্তমের সাফল্যের তাস। মৃত্যুর ৩১ বছর পরও তাকে নিয়ে এই যে মাতামাতি, পাগলামি এও বা কেন? একটাই উত্তর, তার অব্যর্থ শারীরিক আবেদন।
উত্তম কুমারের জন্ম ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার অহেরিটোলা স্ট্রিটে, মামার বাড়িতে। মৃত্যু ২৪ জুলাই ১৯৮০, বৃহস্পতিবার রাত ৯-৩০ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকে।
১৯৩৯ সাল। দেশজুড়ে তখন এক অশান্ত অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা। সেই উত্তপ্ত সময়ের মধ্যে কৈশোর পেরিয়ে যৌবন উত্তমের। একচল্লিশের ২২ শ্রাবণ। ১৫ বছরের অরুণ পায়ে পায়ে এসে দাঁড়াল রবীন্দ্রনাথের শেষ যাত্রায়, লক্ষ মানুষের মিছিল। পরের বছরই ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের উন্মাদনায় ভবানীপুরের অলিগলিতে বের হতো অরুণের নেতৃত্বে স্বদেশি প্রভাতফেরি। অরুণেরই লেখা গান তারই সুরে গাওয়া হতো। সে বছরই ম্যাট্রিক পরীক্ষা এবং পাস। ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন কলকাতার সাউথ সুবাবরণ মেইন স্কুল থেকে। ভর্তি হন গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে। এখানে পড়েন কমার্স নিয়ে। ১৯৪২ সালেই নিদান ব্যানারর্জির কাছে সঙ্গীতের তালিম নেন। ১৯৪৪ সালে পৌর কমিশনারস অফিসে খিদিরপুর ডকে ক্যাশিয়ারের চাকরি পান। তবে ২ হাজার টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে জমা দিয়ে।
১৯৪৭ সালে প্রথম ভারত লক্ষ্মী স্টুডিওর ফ্লোরে আসেন উত্তম কুমার। প্রথম অভিনীত ছবি ‘মায়াডোর’ (হিন্দি)। এ ছবিতে কাজ করে দৈনিক পাঁচ সিকি পেতেন। নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় ‘কামনা’ ছবিতে (১৯৪৯)। নায়িকা ছিলেন ছবি রায়। ‘কামনা’ মুক্তি পাওয়ার পর এটি ফ্লপ করল।
কলকাতার ভবানীপুর এলাকায় থাকতেন উত্তম কুমার। কাছাকাছি পাড়ায় সেকালের রূপবান নায়ক ধীরাজ ভট্টাচার্য, পুরনো ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, চরিত্রাভিনেতা ইন্দু মুখার্জি বসবাস করতেন। তাদের কাজ দেখে শিখেছেন উত্তম কুমার। আর তার সঙ্গে অবচেতন মনে ছিল দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রমথেশ বড়ুয়া, ছবি বিশ্বাস, জ্যোতি প্রকাশ, অসিত বরণ ও রবীন মজুমদারের মতো রোমান্টিক সব নায়কের রূপালি পর্দায় দেখার অদৃশ্য শিহরণ। সে জন্য তিনি ফিল্মে নায়ক হতে পেরেছিলেন। অভিনয়ের চেয়েও তখন তার বড় মূলধন ছিল চেহারা। অথচ উত্তম কুমার প্রথম দিকের কোনো ছবিতেই নায়কের ভূমিকা পাননি। শুধু মুখ দেখানো ছাড়া আর কোনো অস্তিত্বই ছিল না সেখানে তার। সম্পূর্ণ অবজ্ঞাত, বরং বলা যায় অনুগ্রহের পাত্র হয়েই মাত্র উপস্থিত থেকেছিলেন। মায়াডোর (১৯৪৭), দৃষ্টিদান (১৯৪৮), কামনা (১৯৪৯), মর্যাদা (১৯৫০), ওরে যাত্রী (১৯৫১), নষ্ট নীড় (১৯৫১), সঞ্জীবনী (১৯৫২) প্রভৃতি ছবিতে উত্তম কুমার ছিলেন। এর মধ্যে একটি ছবিও ব্যবসাসফল হয়নি। যে জন্য উত্তম কুমার তখন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন।
১৯৫৪ সালে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছবি দিয়েই উত্তম কুমারের জয়যাত্রা শুরু। নায়িকা সুচিত্রা সেন। প্রায় ম্যাজিকের মতো ফল পাওয়া গেল ‘অগ্নিপরীক্ষা’ থেকে। বাংলা ছবিতে যে ভাটার টান অনুভব করা যাচ্ছিল, সেই স্তিমিত জলে সহসা আবেগ সঞ্চার করল ‘উত্তম-সুচিত্রা’ জুটি। বাংলা ছবিতে এলো গ্ল্যামার, দর্শকদের ভালো লাগার সঙ্গে যুক্ত হলো মুগ্ধতা। নায়ক থেকে মহানায়কের শীর্ষ আসনটিতে উত্তরণের সঠিক যাত্রারম্ভ হলো এই ‘অগ্নিপরীক্ষা’ থেকে। বাঙালি দর্শক সেদিন তাদের আইডিয়াল একজন রোমান্টিক হিরোকে খুঁজে পেলেন উত্তম কুমারের মধ্যে, যার বিকল্প তার জীবদ্দশায় আর আসেনি। নায়ককে ঘিরে যে মোহ বিস্তার, যে গুঞ্জরণ, যে কৌতূহল সবই শুরু হয়েছিল ১৯৫৪ সালের সেই সন্ধিক্ষণ থেকে।
গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের প্রায় মধ্যভাগ থেকে উত্তম কুমার ক্রমেই দর্শক, প্রযোজক, পরিবেশক এবং পরিচালকদের দৃষ্টি কেড়ে নিতে লাগলেন। এভাবেই বক্স অফিসের নিশ্চিত গ্যারান্টিও হয়ে উঠলেন তিনি। তিনি শুধু বাংলা ছবির অন্যতম নায়কই নন, চরিত্রাভিনেতাও। বহু বাংলা ছবিকে ভরাডুবি থেকে আশ্চর্যজনকভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছেন শুধু উত্তম কুমার। শুধু প্রণয়ী নায়কের ভূমিকাতেই তিনি স্থিত থাকেননি, তিনি মদ্যপ জমিদার থেকে ছিঁচকে চোর—বহু ভূমিকাতেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন চরিত্রের মাপে।
চলচ্চিত্রের নায়ক উত্তম কুমার পর্দার বাইরেও কিংবদন্তি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলেন আপামর জনসাধারণের মধ্যে। সাধারণ মধ্যবিত্ত মেয়েদের কাছে সুদর্শন পুরুষ অথবা রোমান্টিকতার সার্থক উদাহরণ ছিলেন উত্তম কুমার। নায়ক শব্দের আগে ‘মহা’ শব্দটি যোগ হয়েছিল ১৯৭০ সালের পর থেকে। এটা কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। জনসাধারণের ভালোবাসা আর মুগ্ধতা থেকেই এই শব্দটি জন্ম নিয়েছিল। ক্রমেই উত্তম কুমারের নামের পাশে এই বিশেষণটি স্থায়ী হয়ে গেল। ১৯৬৬ সালে সত্যজিত্ রায় ‘নায়ক’ লিখেছিলেন উত্তম কুমারকে ভেবেই। এভাবে বাংলা সাহিত্যেও অনেক গল্প এবং উপন্যাস লেখা হয়েছে উত্তম কুমারের কথা মনে রেখেই।
উত্তম কুমার বিয়ে করেন ১৯৫০ সালের ১ জুন পদ্ম পুকুরের বাসিন্দা গৌরী দেবীকে। একমাত্র ছেলে গৌতমের জন্ম ১৯৫১ সালে। মৃত্যুর দুই বছর আগে ১৯৭৮ সালে ছেলে গৌতমকে বিয়ে করিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে নাতনির জন্ম হলে তার নাম রাখেন নবমিতা। কয়েক বছর আগে নবমিতা ফিল্মে যোগ দিয়েছিলেন; কিন্তু তিনি সেভাবে আগাতে পারছেন না।
উত্তম কুমার মহানায়ক হিসেবে তিন দশক ধরে বাঙালি দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিলেন। এভাবে মাতিয়ে রেখে মোহাবিষ্ট করে রাখার ইতিহাসও একমাত্র এই উত্তম কুমারের। যে জন্য এখন পর্যন্ত সব বয়সের দর্শকই ঘরে বসে ডিভিডির বদৌলতে তার অভিনীত ছবিগুলো দেখে থাকেন। তার অভিনীত পথে হলো দেরী, শিল্পী, সাগরিকা, হারানো সুর, সপ্তপদী, অগ্নিপরীক্ষা, শহরের ইতিকথা, পৃথিবী আমারে চায় প্রভৃতি যে চিরকালের চিরদিনের ছবি হয়ে থাকল।